
বাংলাদেশে আম হলো ফলের রাজা এবং গাছ হলো জাতীয় আমগাছ। আম সাধারণত উষ্ণ ও অবউষ্ণম-লীয় অঞ্চলের জন্মে। আম সাধারণত উষ্ণ ও অবউষ্ণমন্ডলীয় অঞ্চলের জন্মে থাকে। ইন্দো-বার্মা অঞ্চলে আমের উৎপত্তিস্থল বলে ধারণা করা হলেও বাংলাদেশসহ ভারতীয় উপমহাদেশে আম সবচেয়ে জনপ্রিয় ফল। এই ফলের নিম্নে ফলের মাছি বা আমের মাছি পোকা সম্পর্কে উল্লেখ করা হলো-
আমের মাছি পোকা: মাছি পোকা দ্বারা পরিপক্ব আম আক্রান্ত হয়ে থাকে। ফজলি, ল্যাংড়া, খিরসাপাতসহ বিভিন্ন জাতের গাছে আম পাকা থাকা অবস্থায় এ পোকা আক্রমণ করে।
ক্ষতির প্রকৃতি: স্ত্রী পোকা ডিম পাড়ার অঙ্গের সাহায্যে গাছে থাকা অবস্থায় পাকা আমের গা চিরে ডিম পাড়ে অর্থাৎ খোসার নিচে ডিম পাড়ে। আক্রান্ত স্থান থেকে অনেক সময় রস বের হয়। বাইরে থেকে দেখে কোনটি আক্রান্ত আম তা ঝুঝা যায় না। এ পোকার কীড়া পাকা আমের মধ্যে প্রবেশ করে শাঁস খেয়ে ফেলে। এতে ফল পচে যায় ও ঝরে পড়ে। আক্রান্ত আম কাটলে ভেতের সাদা রঙের অসংখ্য কীড়া দেখা যায়। সাধারণত এ পোকা আমের ওপর এবং নিচ উভয় অংশে আক্রমণ করে। পোকার আক্রমণ বেশি হলে গাছের সব আম খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে যেতে পারে।
প্রতিকার বা দমন ব্যবস্থাপনা: গাছে আম সম্পূর্ণ পাকার আগেই পেড়ে আনতে হবে। আক্রান্ত আম সংগ্রহ করে মাটির নিচে গভীর গর্ত করে পুঁতে ফেলতে হবে। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা আমের রসের সাথে ৫ গ্রাম সেভিন মিশিয়ে বিষটোপ বানিয়ে এ বিষটোপ বাগানে রেখে মাছিপোকা দমন করা যেতে পারে।
আম পাকার আগে যখন পূর্ণ বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় তখন ডিপটেরেক্স চা চামুচের ৪ চামচ ৮.৫ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৭ দিন পর পর দুই বার স্প্রে করতে হবে। অথবা ডায়াজিনন ৫০ ইসি ২মিলি/লিটার পানিতে মিশিয়ে ফলে স্প্রে করতে হবে (ওই সময়ে ফল খাওয়া যাবে না)। আম পরিপক্ব ও পাকার মৌসুমে আম বাগানে ব্লিচিং পাউডার প্রতি লিটার পানিতে ৫ গ্রাম হারে স্প্রে করা যেতে পারে। সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে প্রচুর পুরুষ পোকা মারা যাবে এবং বাগানে মাছি পোকার আক্রমণ কমে যাবে। আম পরিপক্ব হওয়ার সময় প্রতিটি আম কাগজ (ব্রাউন পেপার) দ্বারা মুড়িয়ে দিলে আমকে মাছি পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা করা যাবে।
আক্রান্ত গাছে ডাইমেক্রন ১০০ ইসি ৩০০ মিলি বা ডায়াজিনন ৫০ ইসি ৪০০ মিলি বা সুমিথিয়ন ৫০ ইসি ৪৫৪ মিলি ২২৫ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।