
কৃষি বিপ্লবের নতুন সম্ভাবনায় মেহেরপুরে শুরু হয়েছে কাসাবার চাষ। কৃষি বিভাগের উদ্যোগে কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় পরীক্ষামুলক বানিজ্যিকভাবে এই প্রথম কাসাবার চাষ হচ্ছে মেহেরপুরে।
কৃষি অফিসের সহযোগীতায় ৭ বিঘা জমিতে কাসাবা চাষ শুরু করেছে সদর উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা টুটুল। জমির গাছ ও আলুর গুটি দেখে আশার আলো দেখছে চাষী ও কৃষি বিভাগ।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রধান খাদ্য এবং উৎপাদনের দিক থেকে গম, ধান, ভুট্টা, গোল আলু ও বার্লির পরই কাসাবার স্থান। বাংলাদেশে কাসাবা ‘শিমুল আলু’ নামে পরিচিত। পুষ্টিগুণে ভরপুর এই চাষটি পাহাড়ি এলাকায় হলেও এই প্রথম মেহেরপুর জেলার সমতল ভুমতে কৃষি অফিসের সহযোগীতায় ৭ বিঘা জমিতে এই আলুর চাষ করছে সদর উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা টুটুল। বর্তমানে তার গাছে আলু নামতে শুরু করেছে। আর এক মাস পর সে আলু তুলতে শুরু করবে। চাষী টুটুল জানায়, বিঘাপ্রতি আলুটি চাষের জন্য খরচ হয়েছে ১০-১২ হাজার টাকা। তার ৭ বিঘা জমিতে ৭-৮ লাখ টাকার কাসাবা বিক্রির আশা তার।
টুটুলের এই কাসাবা চাষ দেখে এলাকার অনেক চাষী আগ্রহী হয়েছে আগামীতে চাষ করার। যদি কাসাবা বিক্রির বাজার সৃষ্টি হয় তবে এলাকায় এই চাষ বাড়বে বলে মনে করছে চাষীরা।
মেহেরপুরে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলমগির হোসেন জানান, ‘কাসাবা’ আমাদের কাছে নতুন হলেও এটি বিশ্বে জনপ্রিয় একটি খাবার। এই উদ্ভিদটি পাহাড়ী এলাকায় খুব ভালো হলেও সমতল ভূমিতেও হয়। এটি হচ্ছে গাছের শেকড়জাত এক ধরনের আলু, জন্মে মাটির নিচে।
কাসাবা দক্ষিণ আমেরিকার গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ, এটি ব্যাপকভাবে ক্রান্তীয় এবং প্রায় ক্রান্তীয় অঞ্চলে বার্ষিক ফসল হিসেবে চাষ করা হয়। প্রতি ইঞ্চি জমির সর্বোত্তম ব্যবহারের লক্ষ্যে কাসাবা হচ্ছে একটি সম্ভাবনাময় ফসল। দেশে ক্রমবর্ধমান খাদ্য খাটতি মোকাবেলায় কাসাবা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। কাসাবা চাষে কোনো ঝামেলা নেই বললেই চলে। অল্প পরিশ্রমে অধিক ফলন পাওয়া যায়। জেলায় এবার প্রথম কাসাবার চাষ হচ্ছে। তৃণমূল পর্যায়ের কৃষকদের স্বল্পমেয়াদি লাভজনক এই ফসলটি সম্পর্কে বুঝাতে পাড়লে এ এলাকায় কাসাবা চাষে ব্যাপক সম্ভবনা সৃষ্টি হবে বলে মনে করেন এই কৃষি কর্মকর্তা ।