
কৃষি মন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন; কৃষির সাফল্যে আর একটি সংযোজন গ্রীষ্মকালিন টমেটো। কৃষি গবেষকদের সাফল্যের ফলে দেশে এখন সারা বছরই এই সবজিটি পাওয়া যায়, যার চাহিদা বছর জুড়ে থাকে। অল্প জমিতে এ সবজির চাষ করে অন্য ফসলের চেয়ে বেশি লাভ পাওয়া যায়। গ্রীষ্মকালীন টমেটো শীতের চেয়ে অন্তত চার-পাঁচ গুণ দামে বিক্রি হবে। আর এটি প্রসেসিং করতে পারলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে। উপমহাদেশে টমেটো রপ্তানির বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। জেলার তালা উপজেলার নগরঘাটা গ্রামে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষের ওপর মাঠ দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। মাঠে উচ্চফলনশীল টমেটো ক্ষেত পরিদর্শন করেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন; দক্ষিণের জেলা সাতক্ষীরায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এখানে লবনাক্ততা বাড়ছে। তারপরও কৃষি গবেষকরা উচ্চ ফলনশীল গ্রীষ্মকালীন টমেটোর জাত উদ্ভাবন করে সাফল্য পেয়েছেন। শীতে আগাম চাষ করেও ভালো মুনাফা পেতে পারেন কৃষকরা। বারি উদ্ভাবিত জাতের ফলন বেশ ভালো হেক্টর প্রতি ৩৫-৪৫ টন উৎপন্ন হয়। টমেটো প্রক্রিয়াজাত ও রপ্তানি করার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে। এছাড়া উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবনের মাধ্যমে পেয়াজ উৎপাদনে আগামীতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে দেশ।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন; আগামী কমিটিগুলোতে অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হবে। আগামী বছর প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা হবে।
অপর এক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন; দুর্বৃত্ত যেই হননা কেন,তাকে ছাড় দেয়া হবেনা। তিনি ক্যাসিনো ব্যবসাসহ অবৈধ বাণিজ্য পরিচালনাকারীদের গ্রামের ক্ষেতে টমেটো চাষের মত লাভজনক পেশায় নিয়োজিত হওয়ার পরামর্শ দেন। এছাড়া উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবনের মাধ্যমে পেয়াজ উৎপাদনে আগামীতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে দেশ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য মোস্তফা লুৎফুল্লাহ, সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য মোস্তাক আহমেদ রবি,কৃষি সচিব মো: নাসিরুজ্জামান;বিএডিসি’র চেয়ারম্যান মো: সায়েদুল ইসলাম; বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. মো: আবুল কালাম আযাদ;জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল,পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান।
পরে মন্ত্রী সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজে খুলনা বিভাগীয় অঞ্চলের কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে মত বিনিময় করেন। মতবিনিময়কালে মন্ত্রী বলেন; দেশ প্রেমে উজ্জীবিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারন করে কাজ করতে হবে। এমন কিছু কাজ করে যেতে হবে যা মানুষের কল্যাণে আসে,মানুষ সব সময় স্মরণ করবে। মানব কল্যাণের কথা সব সময় মাথায় রাখতে হবে।
বারি উদ্ভাবিত হাইব্রিড টমেটো-৮ এবং বারি হাইব্রিড টমেটো-১০ চাষ করে ভালো সফলতা অজর্ন করা সম্ভব হয়েছে। গ্রীষ্মকালে টমেটো চাষ করতে কোনো ধরনের হরমোন কিংবা ক্ষতিকর কিটনাশক প্রয়োগের প্রয়োজন হয় না। সারা বিশ্বে আলুর পরই টমেটো উৎপন্ন হয়। অধিকাংশ দেশেই টমেটো অন্যতম প্রধান সবজি। টমেটো কাঁচা, পাকা এবং রান্না করে খাওয়া হয়। প্রতি মৌসুমে বিপুল পরিমাণ টমেটো সস, কেচাপ, চাটনি, জুস, পেষ্ট, পাউডার ইত্যাদি তৈরিতে ব্যহৃত হয়।
টমেটোর কদর মূলত ভিটামিন-সি এর জন্য। তবে এর রঙ, রূপ ও স্বাদও অনেককে আকৃষ্ট করে। টমেটো হচ্ছে একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর সবজি। সালাদসহ টমেটো দিয়ে সুস্বাদু সস, কেচাপ ইত্যাদি তৈরি করা হয়। তাই টমেটোর চাহিদা সব সময়ই সবজায়গাতে থাকে। টমেটো চাষ করে পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাড়তি আয় করা সম্ভব।