
এবারো দেশে আবাদ ও উৎপাদনের ৭০ ভাগেরও বেশী তরমুজের যোগান দিচ্ছে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চল। চলতি মৌসুমে এ অঞ্চলের প্রায় ৬৪ হাজার হেক্টরে ২৭ লাখ টন তরমুজ উৎপাদনের আশা করছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
তবে গত সপ্তাহের দুইদিনে মাঝারী বর্ষণে ভোলার চরফ্যাশন এবং বরগুনার পাথারঘাটাসহ কয়েকটি এলাকার মাঠে থাকা তরমুজের বেশ ক্ষতি হয়েছে। কৃষকরা চেষ্টা করছেন যত দ্রুত সম্ভব ক্ষেত থেকে তরমুজ তুলে বাজারজাত করতে। কিন্তু বর্তমানে পাইকার মাঠ থেকে তরমুজ কিনতেও খুব একটা আগ্রহী হচ্ছেনা বলে জানিয়েছেন তরমুজ চাষীরা। ফলে গত বছরের মতো এবারো তরমুজ নিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকদের দুর্ভোগ পিছু ছাড়ছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতবছর রবি মৌসুমে দেশে প্রায় ৬৪ হাজার হেক্টর জমিতে ২৬ লাখ টনের মতো তরমুজ উৎপাদন হলেও দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলার ৩৭ হাজার হেক্টরে উৎপাদন ছিল প্রায় ১৭ লাখ টন। কিন্তু এবার পরিস্থিতির আশাতীত উন্নতি হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, পিরোজপুর, বরগুনা ও ঝালকাঠী জেলার উঁচু ও উপকূলীয় বিচ্ছিন্ন দ্বীপসহ নদী তীরবর্তী প্রায় ৬৪ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলে এবার হেক্টর প্রতি প্রায় ৪২ টন হিসেবে ২৭ লাখ টনের মতো তরমুজ উৎপাদনের আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। যা গতবছর সারাদেশে সর্বমোট উৎপাদনেরও বেশী এবং দক্ষিনাঞ্চলে গত বছরের চেয়ে প্রায় ১০ লাখ টন বাড়তি। সূত্রমতে, নদীবহুল দক্ষিণাঞ্চলের নোনাপানি মুক্ত চরাঞ্চলের পলি মাটিতে তরমুজের ভাল আবাদ ও ফলন হয়েছে। গত ১৫ দিন ধরে পরিপক্ক ও সুমিষ্ট তরমুজ বাজারে আসতে শুরু করেছে।
চাষীদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, এক টুকরো জমি থাকবেনা অনাবাদি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ আহবানের পর এবার চরাঞ্চলের অনাবাদি জমিতে এবারই প্রথম তরমুজ চাষ করা হয়েছে। তবে বাড়তি আবাদ ও উৎপাদন এবারো দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকদের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থায় তেমন কোন পরিবর্তন আনতে পারছেনা। কারণ কৃষকরা মাঠ পর্যায়ে প্রতিটি তরমুজ গড়ে এক থেকে দেড়শ’ টাকার বেশী বিক্রি করতে না পারলেও বাজারে আসার পরে সেইসব তরমুজ বিক্রি হচ্ছে তিন থেকে পাঁচশ’ টাকা করে।