
শেরপুরে বিগত এক দশক ধরে বৃদ্ধি পেয়েছে মাছ চাষ। বাড়ছে পুকুর, কিন্তু একের পর এক পুকুর খনন করে শুধু অধিক উৎপাদনশীল বিদেশি জাতের মাছ চাষে ঝুঁকছেন মৎস্য চাষীরা। তাই বিলুপ্ত হতে চলছে দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছ। আর এ দেশীয় জাতের মাছ চাষ বৃদ্ধিতে নানা প্রজাতির দেশী মাছ চাষ করছেন জেলার নকলা মৎস্য উপজেলার চাষীরা।
উৎপাদন কম থাকায় বাজারে দেশীয় মাছে দাম বেশী, তাই দেশী মাছ চাষে লাভও বেশী। অধিক লাভের আশায় বানিজ্যিকভাবে দেশীয় প্রজাতির মাছ চাষে সফলতা পেতে শুরু করেছেন নকলা উপজেলার বানেশ্বরদী গ্রামে মৎস্য চাষী শামীম আহমেদ। উপজেলা মৎস্য অফিসের পরামর্শ নিয়ে ২ একর জমিতে ৫টি পুকুরে বিভিন্ন দেশীয় প্রজাতির মাছ চাষ করছেন তিনি। এসব পুকুরে রুই, কাতলা, মৃগেলসহ কার্প জাতীয় মাছের সাথে মিশ্রভাবে দেশীয় প্রজাতির টেংরা, শিং, কৈ, টাকী, পুঁটি, পাবদা চাষ করে আসছেন। আর এতে তিনি বছরে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করছেন বলে জানান। খরচ বাদে তিনি বেশ লাভবান হচ্ছেন।
মৎস্য চাষী শামীম আহমেদ জানান, এক সময় খাল-বিল-ডোবায় দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত। এখন আর তা তেমন পাওয়া যায় না। তাই আমি দেশী মাছ চাষের সিদ্ধান্ত নেই। দেশীয় প্রজাতির মাছ চাষ করে আজ আমি স্বাভলম্বী। প্রতি বছর আমার ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা লাভ হচ্ছে। এতে ছেলে মেয়েদের লেখা পড়ার খরচসহ সাংসারিক যাবতীয় খরচ করেও স্বচ্ছল জীবন যাপন করছি। এছাড়া পুকুর পাড়ে পেঁপেসহ বিভিন্ন সবজি চাষে বেশ কিছু বাড়তি আয়ও হচ্ছে। হয়েছে কিছু বেকার তরুণদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও। তার এ সফলতা দেখে উপজেলার অন্যান্য বেকার যুবকরাও ঝুকছে দেশীয় প্রজাতির মাছ চাষে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সুলতানা লায়লা তাসনীম জানান, বানেশ্বরদী গ্রামের শামীম একজন সফল মাছ চাষী। বিদেশী মাছ চাষের সাথে মিশ্র চাষ হিসেবে দেশীয় প্রজাতির মাছ চাষ করতে উপজেলা মৎস্য দপ্তরের পক্ষ থেকে সার্বিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। নকলায় দেশীয় জাতের মাছ চাষ বৃদ্ধিতে মৎস্য দপ্তরের পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ে চাষীদের উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। এ উপজেলায় বন্যার পানিতে প্লাবিত হয় না তাই যে কেউ সহজেই অল্প খরচে দেশীয় প্রজাতির মাছ চাষ করে সফলতা পেতে পারেন।