
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন এলাকায় এবং বিভিন্ন জাতের ধানে শনাক্ত করা হয়েছে ধানের ৩২টি রোগ। এর মধ্যে ১০টি মুখ্য রোগ বাকি ২২টি গৌণ। এ রোগগুলো দ্বারা ধানের ফলন শতকরা ১০-১৫ ভাগ কম হয়। রোগগুলোর মধ্যে ভাইরাসজনিত ২টি, ব্যাকটেরিয়াজনিত ৩টি, ছত্রাকজনিত ২২টি, কৃমিজনিত ৫টি। ধানের খোল পচা রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কের আলোচনা করা হলো:
রোগের নাম: খোল পচা রোগ (Sheath rot) রোগের কারণ স্যারোক্লেডিয়াম ওরাইজি (Sarocladium oryzae) নামক ছত্রাক দ্বারা হয়ে থাকে।
রোগের বিস্তার : এটা বীজবাহিত। রোগাক্রান্ত নাড়া ও বিকল্প পোষকে অবস্থান করে। মাজরা পোকা ও টুংরো রোগ আক্রান্ত গাছে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি হয়। গরম ও সেঁতসেঁতে আবহাওয়ায় এ রোগ বৃদ্ধি পায়। বৃষ্টির ঝাপটায় এ রোগ ছড়ায়। খোলপচা রোগটি সব মৌসুমেই দেখা যায়। সাধারণত গাছের থোর অবস্থা এ রোগটির উপযোগী সময়।
রোগের লক্ষণ: রোগটি কোনো অবস্থাতেই পাতায় হয় না। খোলপচা রোগটি যে কোনো খোলে হতে পারে তবে শুধুমাত্র ডিগ পাতার খোল আক্রান্ত হলেই ক্ষতি হয়ে থাকে। ধানে থোড় আসার সময় এ রোগের আক্রমণ দেখা যায়। প্রথমে শেষ পাতার খোলের ওপর গোলাকার বা অনিয়মিত লম্বা দাগ হয়। দাগের কেন্দ্র ধূসর ও কিনারা বাদামি রঙ বা ধূসর বাদামি হয়। দাগগুলো একত্রে বড় হয়ে সম্পূর্ণ খোলেই ছড়াতে পারে। থোড়ের মুখ বা শীষ পচে যায় এবং গুঁড়া ছত্রাংশ খোলের ভেতর প্রচুর দেখা যায়। রোগের আক্রমণ বেশি হলে অনেক সময় শীষ আংশিক বের হয় বা মোটেই বের হতে পারে না এবং ধান কালো ও চিটে হয়ে যায়।
- সুস্থ বীজ ব্যবহার করতে হবে।
- কার্বেন্ডাজিম (অটোস্টিন) অথবা কার্বোক্সিন + থিরাম (প্রোভ্যাক্স ২০০ ডব্লিউপি)প্রতি কেজি বীজে ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে শোধন করতে হবে।
- জমির আশপাশ পরিষ্কার রাখতে হবে।
- সুষম সার ব্যবহারও ইউরিয়া সার কম প্রয়োগ করতে হবে।।
- পটাশ সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে।
- খোল পচা দেখা দিলে জমির পানি শুকিয়ে কিছুদিন পর আবার সেচের পানি দিতে হবে।
- প্রোপিকোনাজোল (টিল্ট ২৫০ ইসি) ১ লিটার পানিতে ১মিলি হারে মিশিয়ে ১০ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে