
ডুমুরিয়ার ঘোনা গ্রামের বাসিন্দা নিউটন মন্ডল পানি কচু চাষ করে সফল কৃষকদের তালিকায় তিনি এখন ১১তম। শুধু কচু চাষ করেই তার এ সফলতা। তিনি শুধু দেশের মধ্যে কচু নিয়ে বসে নেই। সেই কচু দেশের গণ্ডি পেরিয়ে যাচ্ছে কোরিয়া পর্যন্ত। ৬-৭ ফুট লম্বা হওয়ায় তার কচু দেখতে অনেকেই এখন ভিড় করছেন তার ক্ষেতে। কচুর পাশাপাশি এখন চাষ করছেন চুঁইঝাল, বিটি বেগুন, পেয়ারা এবং করেছেন গরুর খামার।
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার রংপুর ইউনিয়নের ঘোনা মাদারডাঙ্গা গ্রামে বাড়ি নিউটন মন্ডলের। দৌলতপুর-সাতক্ষীরা সড়কের পাশ দিয়ে গেলেই দেখা মেলে পানিকচুর ক্ষেত।
এখন জমির পরিমাণ ৫৫ শতক। বর্গা নেয়া এ জমি প্রতি বছর ভাড়া দিতে হয় ১২ হাজার টাকা। এখন কচুরলতি, ফুল ও কচু এবং চারা বিক্রি করে প্রতি বছর প্রায় ৫ লাখ টাকা আয় করেন নিউটন। ইতোমধ্যে এলাকায় বেশ পরিচিত হয়ে উঠেছেন তিনি।
নিউটন জানান, ঘেরের পাড় থেকে দেশি জাতের কিছু পানিকচুর চারা সংগ্রহ করে সম্পূর্ণ নিজস্ব পদ্ধতিতে রোপণ করা হয়। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে গাছ লাগানো শেষ হয়ে যায়। তিন ফুট দূরত্বে কচুর চারা রোপণ করা হয়। কোদাল দিয়ে এক ফুট গভীর করে চাষ দেয়া হয়। চারা লাগানোর পর জৈব ও রাসায়নিক সার দেন সুষমভাবে।
কচু চাষি নিউটন মন্ডল জানান, এতদিন আমার কচু দেশের মধ্যে খুলনা, বরিশাল, ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগে গেছে। এখন সেই কচু যাচ্ছে দেশের বাইরে। একসময় মানুষের পাশ দিয়ে হেঁটে গেলেও কেউ ফিরে তাকাতো না। এখন দেশের বিভিন্ন স্থানের মানুষ আমারে চেনে। অনেক বড় বড় মানুষ আমার ক্ষেত দেখতে আসে। শ্রম কখনও বিফলে যায় না। এখন একটাই স্বপ্ন মেয়েটা বড় হয়ে ডাক্তার হবে। এলাকার গরিব, দুঃখী মানুষের সেবা করবে।
নিউটনের স্ত্রী স্মৃতিলতা মালাকার জানান, শুরুর দিকে অনেক মানুষ অনেক কথা বলেছিল। আমরা থেমে যাইনি। এখন সেই কচুতে আমাদের পরিবারের সচ্ছলতা ফিরে এসেছে। আমাদের মেয়েটি স্কুলে যাচ্ছে। গরুর খামার করেছি। পেয়ারার চাষ, বিটি বেগুন চুঁইঝালের চাষাবাদও ভালো হচ্ছে।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মোসাদ্দেক হোসেন জানান, নিউটন মন্ডল একজন ভালো কৃষক। তাকে নিয়মিত আমরা মনিটরিং করছি। প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি। তার এ কচু বেশ টেস্টি। তার কচু এখন প্রসেসিং হচ্ছে কোরিয়া যাওয়ার জন্য। সূত্র: জাগো নিউজ