
থাই থ্রি (বারি-৪) জাতের পেয়ারা চাষ করে সফলতা পেয়েছেন শেরপুরের নকলা উপজেলার কায়দা এলাকার যুবক নাজমুল হক। তিনি শখের বসে তিন বছর আগে নাটোর থেকে এ জাতের পেয়ারার চারা এনে লাগিয়ে আজ সফল চাষী হিসেবে উপজেলায় বেকারদের মডেল হয়ে উঠছেন। তার দেখাদেখি পেয়ারা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে আরও অনেক বেকার যুবক।
এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ লাখ টাকার পেয়ারা বিক্রি করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন এই যুবক। তার এই পেয়ারা বাগান দেখতে অনেকেই ভিড় করেন। জেলার চাহিদা মিটিয়ে বিষমুক্ত পেয়ারা যাচ্ছে ময়মনসিংহ, জামালপুর, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।
পেয়ারা চাষী নাজমুল হক জানান, মাটির উর্বর শক্তি ও আবহাওয়া অনুকূলের পাশাপাশি কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় থাই পেয়ারা চাষ করে আমি অনেক লাভবান। বাগানের প্রতিটি থাই পেয়ারার ওজন ৩০০ থেকে ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত হচ্ছে। প্রতিটি গাছ থেকে কমপক্ষে ২৫ কেজি করে পেয়ারা পাওয়া যায়। নিয়মিত পরিচর্যা করে চাষ করলে প্রতিটি পেয়ারা গাছ থেকে ১ হাজার টাকার অধিক লাভবান হওয়া যায়। এবছর আবহাওয়া অনুকোলে থাকলে প্রায় ২০ হাজার পেয়ারা বাজারজাত করতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদী।
জানা যায়, ৩ বছর আগে নাটোর থেকে পেয়ারার চারা এনে ৬০ শতাংশ জমিতে ৫০ হাজার টাকা খরচ করে ২শ ৪০টি চারা রোপন করে পেয়ারা বাগান গড়ে তোলেন। বছর ঘুরেই বাগান থেকে ফলন পেতে শুরু করেন। সারা বছরই ফলন পাওয়া যায়। এ বছর বাগানে অনেক পেয়ারা ধরেছে। বাজারে পেয়ারার দাম কম হলেও অধিক ফলনে লাভবান হওয়া যায়। বাজারে প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। খেতে খুবই সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ফল পেয়ারার যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে বাজারে।
পোকা দমনে বাগানে কোনো ক্ষতিকারক কীটনাশক ব্যবহার করেন না তিনি। কীটনাশকের বদলে তিনি বাগানে স্বাস্থ্য সম্মত বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করেন। বিষমুক্ত উপায়ে পেয়ারা চাষ পদ্ধতিসহ কৃষকদের ফল চাষে নানা বিষয়ে সহযোগিতা করছেন স্থানীয় কৃষি অফিস।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ পরেশ চন্দ্র দাস বলেন, পেয়ারার পুষ্টিমান যে কোনো বিদেশি ফলের চেয়ে বেশি। তাই দেশিও ফলের এই চাষ বাড়ানোর মাধ্যমে বিদেশ থেকে ফল আমদানির খরচ কমানো সম্ভব। সে লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ প্রতিনিয়তই কাজ করে যাচ্ছে। পেয়ারাসহ নানান ফল চাষে কৃষকদের সার্বিক সহযোগীতা করছে কৃষি বিভাগ।