
বিষ কিংবা রাসায়নিক প্রযুক্তি ছাড়া কোনো ফসল উৎপাদন করার কথা অনেকটা স্বপ্নের মতোই। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ফসলের উৎপাদন বাড়াতে এবং উৎপাদিত ফসলকে রোগবালাই থেকে রক্ষা করতে ব্যবহার করা হয় প্রচুর পরিমাণে বিষ বা রাসায়নিক পদার্থ। যা মানবজীবনের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। যার প্রভাবে ক্যান্সারসহ নানা জীবন নাশক রোগের সৃষ্টি হচ্ছে।
তাই মানুষ এখন ঝুঁকছে জৈব প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে খাবার উৎপাদনের দিকে। জৈব প্রযুক্তির সাহায্যে কোনোরকম রাসায়নিক পদার্থ ছাড়াই উৎপাদিত ফসল বা খাবারকে বলা হয় অর্গানিক ফুড। সম্প্রতি জাপানি অ্যাকুয়া কোম্পানি লিমিটেড ও শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) যৌথ উদ্যোগে ‘ক্লিবায়ো হর্টিকালচার’ নামক এক জৈব প্রযুক্তি দেশে ছড়িয়ে দিতে কাজ করছেন শেকৃবির একদল গবেষক।
এ প্রযুক্তি ব্যবহারে ফসলের বালাই দমনের মধ্য দিয়ে একদিকে যেমন নিরাপদ ফসল উৎপাদন সম্ভব হবে সঙ্গে বাড়বে ফসলের ফলন মাত্রাও। সংশ্লিষ্ট গবেষক বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. আ ফ ম জামাল উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, কীট-পতঙ্গ বংশবৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশের আবহাওয়া অনুকূল হওয়ায় ফসল টিকিয়ে রাখতে বাংলাদেশে রাসায়নিক বালাইনাশকের ব্যবহার বেড়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, রোগ দমনকারী বালাইনাশক প্রয়োগে ফসলে এর ক্ষতিকর বাড়তি প্রভাব অনেক দিন থাকে বিধায় সে সব ফসল গ্রহণে কিছুটা স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে যায়। কিন্তু ক্লিবায়ো কিছু উপকারী ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ও এনজাইমের সমন্বয়ে তৈরি হওয়ায় ফসলে ক্লিবায়ো প্রয়োগে স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্ভাবনা খুবই কম। আর এ গবেষণায় সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন রাকিবুজ্জামান মনি।
মনি বলেন, মাটিবাহিত কিছু রোগ দমন করা কষ্টসাধ্য হলেও আমাদের গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী ক্লিবায়ো এ ক্ষেত্রে শক্তিশালী নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা রাখে।
ড. জামাল আরও বলেন, আমরা ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের খামারে করলা, শসা, লালশাক, পুঁইশাক ও নন্দিনী ফুল এবং বিএডিসির খামারে কলা গাছে ক্লিবায়ো প্রয়োগ করে ফসল ফলিয়েছি। এতে দেখা যায় রোগ দমনের পাশাপাশি ফসলের উৎপাদন মাত্রাতে কয়েকগুণ বেশি হয়েছে।
সূত্র: যুগান্তর