মাদারীপুরে পাটের ফলন ভালো হলেও পর্যাপ্ত পরিমাণ পানির অভাবে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন পাটচাষীরা। তাছাড়া স্বল্প পানিতে জাগ দেওয়ায় পাটের রঙ নিয়েও শঙ্কিত তারা। এতে মোটা অংকের লোকসানের আশঙ্কা করছেন চাষী।
সরেজমিনে জেলা সদর, কালকিনি, ডাসার ও শিবচর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, এ বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় নদী থেকে জমিতে পানি আসেনি। তাই শুকনো জমিতে কৃষকদের পাট কাটতে হচ্ছে। পানির অভাবে জমির আশেপাশের জলাশয়গুলোও শুকিয়ে গেছে। তাই অনেক জমির পাট কাটার পরে কৃষকরা মাথায় করে এনে জাগ দিচ্ছেন দূরের কোনো জলাশয়ে। তাছাড়া পুকুরের স্বল্প পানিতে অনেক পাট জাগ দেওয়ায় পানির রঙ কুচকুচে কালো রঙ ধারণ করছে।
জেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে জেলায় দেশি, তোষা ও মেস্তা পাট মিলে ৩৭ হাজার ৪৪০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। গত বছর এই আবাদের পরিমাণ ছিল ৩৫ হাজার ৭১৯ হেক্টর। সে হিসাবে এবার পাটের আবাদ বেড়েছে এক হাজার ৭২১ হেক্টর জমিতে। চলতি বছরে জেলার চাষীদের মধ্যে বিনামূল্যে ২০ হাজার উন্নতমানের পাটবীজ বিতরণ করা হয়। এছাড়াও পাটের ফলনও ভালো হয়েছে।
পানি না থাকায় অল্প পানিতে পাট জাগ দিতে হচ্ছে। ছবি: ইত্তেফাক
শিবচরের স্থানীয় এক কৃষক বলেন, এ বছর বৃষ্টি নাই। তাই নদীর পানিও জমিতে উঠে নাই। পাট মাথায় কইরা বড় রাস্তায় উঠাইতাছি। এইখান থেকে ভ্যানে কইরা বাড়ির পুকুরে নিয়া জাগ দিমু। আমাগো অনেক খরচ পড়তাছে।
বালিগ্রাম এলাকার পাটচাষী রুবেল মাতুব্বর বলেন, আমাদের পাট জাগ দেওয়া পুরাটাই বৃষ্টির ওপর নির্ভরশীল। অনেক দিন ধরে ঠিকঠাক বৃষ্টি না হওয়ায় খালে ও বিলে পানি আসে নাই। পাট কেটে মাঠেই দাঁড় করাইয়া রাখছি। সময়মতো পাট না পঁচাতে পারলে বিশাল ক্ষতি হয়ে যাইবো।
মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সন্তোষ চন্দ্র চন্দ বলেন, এ বছর বৃষ্টি না হওয়ার খালে ও বিলে পর্যাপ্ত পানি হয়নি। সময়মতো পাট পঁচাতে না পারলে অনেক পাটচাষী আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই আমাদের পক্ষ থেকে পাট জাগ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন উৎসের পানি ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।