
বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে মাশরুম চাষ সম্ভব, যা দিয়ে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। রোববার সকালে সাভারে মাশরুম উন্নয়ন ইন্সটিটিউটের নানা কাজের পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি একথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, সম্ভবনাকে কাজে লাগিয়েও জনপ্রিয় করতে পারিনি দেশের মাশরুম চাষাবাদ। সাভারের এই মাশরুম ইনিস্টিউটের মাধ্যমে মাশরুম উৎপাদন, গবেষণা, উন্নয়ন ও চাষি পর্যায়ে পৌঁছে দিতে ও লাভজনক ফসল হিসেবে বাজারজাত করতে নানা পদক্ষেপ হাতে নেয়া হয়েছে।
সারা পৃথিবীতেই মাশরুমের চাহিদা অনেক বেশী। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ধানসহ অন্যান্য শস্য চাষাবাদের পাশাপাশি মাশরুম চাষাবাদ করতে কৃষকদের প্রতি আহবান জানান মন্ত্রী। প্রয়োজনে কৃষকদের মাশরুম চাষে প্রযুক্তি সহায়তাসহ প্রশিক্ষণ ও বীজ দেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর এক কোটি ১০ লাখ টন ধান হতো, এখন হয় তিন কোটি ৮৭ লাখ টন। গম এবং ভুট্টাসহ এটা প্রায় সাড়ে চার কোটি টন দানা জাতীয় খাদ্য উৎপাদন করছি। আমরা অনেকটাই খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। মূল খাদ্য ভাত নিয়ে কোনো হাহাকার নাই। কোনো অভাব বা দুর্যোগ নাই ১২-১৩ বছরে। এখন আমরা চাচ্ছি, কৃষিকে লাভজনক করতে, কৃষিকে আধুনিকীকরণ করতে। মাশরুম অত্যন্ত সম্ভাবনাময় অর্থকরী ফসল, এটার পুষ্টি অনেক বেশি। ওষুধ হিসেবেও সারা পৃথিবীতে এর চাহিদা রয়েছে। আমাদের চাষিরা শুধু ধান করে, ধানের প্রতি তাদের আগ্রহ বেশি। কারণ তাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু পাশাপাশি ঘরের মধ্যেই মাশরুম চাষ করা সম্ভব। নারীরা কাজ করতে পারবে। তেমন কোনো শ্রমিকও লাগে না মাশরুম চাষ করতে। আমরা তাদের যদি প্রযুক্তি শিখিয়ে দিতে পারি, প্রশিক্ষণ দিতে পারি, বীজ দিতে পারি, তাহলে ব্যাপকভাবে এটা চাষ করা সম্ভব।
মানুষের আয় বাড়াতে হবে, কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে, জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার জন্য মাশরুম একটা সম্ভাবনাময় ফসল। আমরা একটি প্রকল্প প্রণয়ন করেছি। একনেকে পাঠানো হয়েছে। আমি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আশাবাদী এ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন হবে। এটা বাস্তবায়ন করে সারা দেশে মাশরুম উন্নয়ন করা সম্ভব হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাসানুজ্জমান কল্লোল ও সাভার উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মুঞ্জুরুল আলম রাজীবসহ সারাদেশ থেকে আসা মাশরুম চাষিরা।