
রিফাত হোসাইন সবুজ, নওগাঁ: নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের বড় মহেশপুর গ্রামে ৭ বিঘা লিজকৃত জমিতে ইসরাফিল হোসেন নামের এক যুবক এন জি এন এগ্রো নামে মিশ্র কৃষি খামার শুরু করেছেন গত এক বছর আগে। তার এ মিশ্র খামারে চাষ হচ্ছে ১২ রকমের ফল, নানা জাতের সবজি, মুরগী, কবুতর, মৌমাছিসহ বেশ কয়েক রকমের কৃষি পন্য। এখন তিনি স্বপ্ন দেখছেন কৃষি খামারের মাধ্যমে সাবলম্বী হওয়ার।
নওগাঁ শহরের বয়েজহোম পাড়ার মৃত আব্দুল বারিকের বড় ছেলে ইসরাফিল হোসেন। দুই ভাই তিন বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে ইসরাফিল হোসেন স্থানীয় কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা শেষ করে বসে না থেকে কৃষি খামার করার পরিকল্পনা করে এক বছর আগে জেলা শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে মহেষপুর গ্রামের ৭বিঘা জমি লিজ নিয়ে গড়ে তোলেন এনজিএন এগ্রো নামের মিশ্র কৃষি খামার।
বর্তমানে সেখানে চাষ করছেন মিশরীয় জাতের বড়ই, কমলা, মালটা, ডালিম, পেঁয়ারা, সফেদা, আম, লিচু লেবুসহ ১২ রকমের ফল। এছাড়া তার মিশ্র খামারে রয়েছে লাউ, কুমড়া, সজিনা, পেয়াজ-রসূন, মরিচসহ বেশ কিছু সবজি। পাশা-পাশি রয়েছে মুরগীর খামার, মৌমাছি চাষ এবং কবুতর পালনও করেছেন এ খামারে। ইতিমধ্যে তিনি বড়ই, পেঁয়ারা, লাউ, সজিনা, মুরগী, সফেদা, মধু পাইকারী ও খুচরা বিক্রি করতে শুরু করেছেন।
প্রতিদিনই দূর দূরান্ত থেকে নানা বয়সী মানুষ আসছেন ইসরাফিলের মিশ্র কৃষি খামার দেখতে। বিশেষ করে বেকার তরুনরা বেশি আকৃষ্ট হচ্ছেন তার খামার দেখে। অনেকে করোনায় বসে না থেকে তার মতো মিশ্র খামার গড়ার স্বপ্নও দেখছেন।
১০ বছরের জন্য লিজকৃত জমিতে এ পর্যপ্ত সবমিলিয়ে ইসরাফিলের খরচ হয়েছে প্রায় ৭ লক্ষ টাকার মত। প্রতিবছর জমির মালিককে দিতে হয় ৮০ হাজার টাকা। মিশ্র কৃষি খামারের পরিচর্যার জন্য এক কর্মচারি রাখা হয়েছে। লিজকৃত জমি পতিত ছিল। উচু জায়গা চাষ উপযোগি করে তিনি একবছর ধরে শ্রম ও সাধনার মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন তার স্বপ্নের কৃষি খামার। আগামীতে ইসরাফিলের স্বপ্ন বড় পরিসরে মুরগীর খামার ও মাছ চাষের। ক্যামিকেল ও বিষমুক্ত ফল এবং কৃষি পন্য উৎপাদনের মাধ্যমে তিনি দেশের কৃষিখাতের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চান। কৃষি পন্যের ন্যায্য মূল্য কৃষকরা যেন পায় সেই দিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন এই কৃষি খামার উদ্যোক্ততা।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ ইসরাফিলকে তার মিশ্র কৃষি খামার তৈরির শুরু থেকে সব ধরনের পরমর্শ দিয়ে আসছে। যারা কৃষি ভিত্তিক খামার গড়ে তুলে সাবলম্বী হতে চায় তাদের কৃষি বিভাগের মাধ্যমে কৃষি বিষয়ক প্রশিক্ষণ নেয়ারও আহব্বান জানান স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা।