
রোপা-আমন ধানের সোনালী স্বপ্নে হাসি ফুটেছে সিরাজগঞ্জের কৃষকদের মাঝে। শষ্য ভান্ডারখ্যাত চলনবিলসহ সিরাজগঞ্জ জেলায় চলতি মৌসুমে ফসলের মাঠজুড়ে বাতাসে দুলছে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন। আর সেই স্বপ্নে সোনালী ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা।
দফায় দফায় ৫ বারের দীর্ঘ মেয়াদী বন্যায় ক্ষতি হওয়ার পরও কৃষি বিভাগ মনে করছে, জেলায় রোপা-আমন মৌসুমে যে পরিমাণ আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে, তাতে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন কৃষকরা। চলনবিলসহ জেলার প্রতিটি উপজেলায় কৃষকের স্বপ্নের রোপা-আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। সাধারণ শ্রমিকদের পাশাপাশি চলনবিলে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর নারী-পুরুষেরা দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে মাঠে মাঠে ধান কাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। আর সেই সাথে পরিবারের গৃহিনীরাও বসে না থেকে নানা কাজে ব্যস্ত। সংসারের কাজ শেষ করে সোনার ফসল গোলায় তুলতে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে যাচ্ছে। শ্রমিক সংকট না হলে আগামী মাসের মাঝামাঝি জেলার কৃষকরা ধান ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা করছে কৃষি অধিদফতর।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে জানা যায় ৫ বারের বন্যায় জেলায় জেলার ৯টি উপজেলায় প্রায় ৩ হাজার ৪০৬ হেক্টর জমির আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।এবারে রোপা-আমনের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৬৯ হাজার ২৫০ হেক্টর ধরা হয়। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদী বন্যার কারণে লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হয়। শেষ পর্যন্ত ৬৮ হাজার ৪০৬ হেক্টর জমিতে রোপা-আমনের চাষাবাদ হয়। বন্যার কারণে জেলার উপজেলাগুলোতে ৮৪৪ হেক্টর জমিতে আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এবার ফলন বেশ ভাল হয়েছে। এতে কৃষকরা তাদের ক্ষতি একটু পুশিয়ে নিতে পারবে। উল্লাপাড়া উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের কৃষক মল্লিক মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ৫ বারের বন্যায় আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। আর সেই ক্ষতি একটু পুশিয়ে নিতে এবারে ৫ বিঘা জমিতে রোপ-আমন ধান লাগিয়েছি। ফলন ও বেশ ভালো হয়েছে কদিন পরেই কাটা শুরু করবো। তবে অনেকেই কাটা শেষ করেছে ফলন ও বেশ ভালো পেয়েছে।
সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক (ডিডি) মোঃ আবু হানিফ জানান,কৃষকরা এবারে রোপা-আমন ধানে ভালো ফলন পেয়েছে যারা ইতিমধ্যে ফলন ঘরে তুলছে তাদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি। তবে এবার পাঁচবারের বন্যার কারনে লক্ষ্যমাত্রার কিছুটা কম আবাদ হয়েছে তারপরও বন্যা ছাড়া ধানের রোগব্যাধি ও অন্য কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হওয়ায় ফলন ভাল হয়েছে। এখনো কাটা শেষ হয়নি শ্রমিক সংকট না থাকলে অঅশা করা যায় ১৫-২০ দিনের মধ্যে কৃষকরা তাদের এই সোনার ফসল ঘরে তুলতে পারবে। আর এতে কৃষকের ক্ষতি একটু পুশিয়ে যাবে ।