জাতীয়ময়মনসিংহ

জনপ্রিয় হচ্ছে বোরো ধানের আদর্শ বীজতলা

বোরো মৌসুমে  দিন দিন বাড়ছে আদর্শ বীজতলার জনপ্রিয়তা। এ বীজতলায় উৎপাদিত ধানের চারা যে কোন বৈরী আবহাওয়া মোকাবিলা করতে পারে। আদর্শ বীজতলায় চারা উৎপাদন খরচ সাশ্রয় হয় এমনকি উৎপাদনও বৃদ্ধি পায়, তাই এ বীজতলার দিকে ঝুকছে চাষীরা। আদর্শবীজতলা তৈরিতে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে উপজেলার কৃষি অফিস।

জানা গেছে, সনাতনী বীজতলার তুলনায় আদর্শ বীজতলায় উৎপাদিত চারার স্বাস্থ্য ভালো হয় এবং কোল্ড ইনজুরির ঝুঁকিও কম থাকে। চারা তোলার সময় শিকড়ে মাটি না ধরায় চারাগুলো কোনো ধরনের আঘাত পায় না। রোপণের পর প্রায় শতভাগ চারা জীবিত থাকে। খরচ কম এবং ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা বেশি আকৃষ্ট হয়েছে আদর্শ বীজতলায়।

চাষীরা জানান, আদর্শ বীজতলায় আড়াই হাত চওড়া জায়গায় বেড তৈরি করা হয়। বেডের দুপাশে ড্রেন থাকে। এ পদ্ধতিতে বীজতলায় বীজ ছিটাতে সহজ হয়। বীজতলায় রোগ ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ হলে সহজে পরিচর্যা করা যায়। আগের পদ্ধতির তুলনায় এ পদ্ধতিতে বীজ নষ্ট হয় কম।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আদর্শ পদ্ধতিতে চারা উৎপাদনের জন্য প্রথমে শুকনা জমি ভালোভাবে চাষ করে জৈব ও রাসায়নিক সার দিতে হয়। জমি প্রস্তুত হলে ২ হাত প্রস্থবিশিষ্ট বেড তৈরি করতে হয়। মানসম্মত বীজ ২৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেগুলো বীজতলায় ছিটাতে হয়। বীজ ছিটানোর ২৫ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে চারাগুলো রোপণের উপযুক্ত হয়।

শেরপুরের নকলায় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল ওয়াদুদ জানান, কৃষকদের কমিউনিটি (আদর্শ) বীজতলার বিষয়ে যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। আগাছা দমন, সার প্রয়োগ, সেচ দেওয়া, বালাই দমন সহজ হয় এবং সুস্থ্য সবল চারা উৎপাদন হয়। স্থানীয় পদ্ধতির চেয়ে এ পদ্ধতিতে বীজ কম লাগে। ফলে খরচও কম হয়। হিসাব মতে ১ শতক বীজতলার চারা দিয়ে প্রায় ২০ শতক ধানের জমি রোপণ করা যায়। এবছর নকলা উপজেলায় ১২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর ২২০ হেক্টর জমিতে আদর্শ বীজতলা করা হয়েছে।